বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
কলাপাড়ায় পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সমাবেশ কলাপাড়ায় নানা আয়োজনে বিশ্ব শিশু দিবস পালিত পটুয়াখালীতে (অবঃ) পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় জমি দখলেরঅভিযোগ জিয়া মঞ্চ বাবুগঞ্জ উপজেলার কর্মী সভা অনুষ্ঠিত গলাচিপায় খাদিজা হত্যার পলাতক আসামি গ্রেফতার কলাপাড়ায় মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপি’র কোষাধ্যক্ষ বাউফলে ইউএনও’র” অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ বরিশালের বাবুগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড যত দ্রুত সম্ভব বর্তমান সরকার একটি নির্বাচন দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করবে-” মেজর (অব.) হাফিজ পটুয়াখালীতে সরকারি প্রসিকিউটর (জিপি) হলেন এ্যাড,আব্দুল্লাহ ইউসুফ কলাপাড়ায় কৃষক সমিতির মানববন্ধন ও সমাবেশ বাউফলে ইউএনও’র বিচারের দাবীতে মানববন্ধন কুয়াকাটা সৈকতের পাবলিক টয়লেট থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার শ্রমিক ট্রান্সপোর্টের উদ্যোগে মুনাজাত অনুষ্ঠিত শোক সংবাদ। কলাপাড়ায় সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল মালেক শিকদার আর নেই
বরিশাল নগরে অবৈধ যানবাহনের বৈধতায় বেড়েছে ভোগান্তি

বরিশাল নগরে অবৈধ যানবাহনের বৈধতায় বেড়েছে ভোগান্তি

Sharing is caring!

অনলাইন ডেক্স:  সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর বরিশাল নগরে প্রকৃত পক্ষে সড়কের পরিমাণ তেমন একটা বাড়েনি। তবে গেল ১০ বছরে অকল্পনীয় হারে বৈধ ও অবৈধ যানবাহনের পরিমাণ বেড়েছে।

সড়ক থাকুক বা নাই থাকুক নগর দাপিয়ে বেড়ানো ব্যাটারিচালিত রিকশা, ব্যাটারিচালিত হলুদ অটোরিকশার পরিমাণ দিনকে দিন বেড়েই চলছে।

বৈধ-অবৈধ যানবাহনের চাপে যানজট যুক্ত নগরীতে নাভিশ্বাস উঠতে শুরু করেছে নাগরিকদের। সেখানে আবার নগর ভবনের চতুর্থ পরিষদের মেয়াদকালের শেষ দিকে এসে প্রায় পাঁচ হাজার ব্যাটারি ও মোটর চালিত হলুদ অটোরিকশার বৈধতা দিয়ে নগরবাসীর ভোগান্তি যেন সীমাহীন হয়ে উঠেছে। দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় না করেই সিটি করপোরেশনের গেল পরিষদ প্রধানের এমন সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে অবৈধভাবে এখতিয়ার বহির্ভূত যানবাহনকে বৈধতার মোড়কে আবৃত করার চেষ্টা বলে দাবি করছেন অনেকে।

দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের শ্রমিক আন্দোলনে থেকেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী। ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা এই নারী নেত্রীর মতে, ব্যাটারি চালিত হলুদ অটোরিকশা যাকে বলা হচ্ছে, সেটি তো মোটরে চলে। আর মোটরচালিত যানবাহনের লাইসেন্স বিআরটিএ ব্যতীত কেউ দিতে পারে না।

তিনি বলেন, নানা চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে দিয়ে ব্যাটারিচালিত হলুদ অটোরিকশা বা ইজিবাইকের অনুমোদন দেওয়ার পথে সরকার। আর বিআরটিএ এ নিয়ে কাজও করছে। কিন্তু হঠাৎ করে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রায় পাঁচ হাজার ইজিবাইক মালিক ও চালককে লাইসেন্স এবং ব্লু- বুক দেওয়ার ঘোষণা দেয়। বিষয়টি তার এখতিয়ারের বাহিরে হলেও নিয়মানুযায়ী দিলেও হয়ত প্রকৃত শ্রমিকদের দুঃখ থাকত না। এগুলোর বেশিরভাগই তার ঘনিষ্ঠ ও অনুসারীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে আবার বেশিরভাগেরই নিজেদের কোনো ইজিবাইক নেই, তার হয় টোকেন ভাড়া দিচ্ছে নয়তো চড়া দামে বিক্রি করে দিয়েছে।

ডা. মনীষার এমন তথ্যের প্রমাণ বাস্তবেও মিলেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান বাসিন্দা ও পেশায় ঠিকাদার এমন ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি মেয়রের ঘনিষ্ঠজন এক জনপ্রতিনিধির কাছে টোকেন চেয়ে পেয়েছেন। যা এখন তার কাছেই রয়েছে, তবে গাড়ি কিনতে না পারায় এখন সেটি ভাড়া বা বিক্রি করার চিন্তা করছেন।

এদিকে নগরভবন সূত্রে জানা গেছে, ইজিবাইক মালিক ও চালককে লাইসেন্স এবং ব্লু-বুক দেওয়ার ক্ষেত্রে যানবাহন শাখার কর্মকর্তা কবির হোসেন সোহেলের অগ্রণী ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও সেখানে চিফ অ্যাসেসরের দায়িত্বে থাকা কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন ও মেয়র অনুসারী এক তরুণ কাউন্সিলর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

যদিও এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশনের যানবাহন শাখার কর্মকর্তা কবির হোসেন সোহেল কিছুই বলতে রাজি হননি, তবে তিনি কর্তৃপক্ষের নির্দেশ যা ছিল তা পালন করেছেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈধ-অবৈধ যানবাহনের ভিড়ে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোয় চলাচল করতে নাগরিকদের দীর্ঘ যানজট পোহাতে হচ্ছে।

বরিশাল নগরের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান বলেন, গেলো ১০ বছরে বরিশাল নগরে মানুষের সংখ্যা অবশ্যই বেড়েছে। কিন্তু নগরের আয়তন কিংবা শহরের রাস্তাঘাটের পরিমাণ বাড়েনি। অথচ এই রাস্তাঘাটেই যানবাহনের পরিমাণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বেড়েছে। অল্প যানবাহনে বেশি মানুষ পারাপারের ওপর জোর না দিয়ে ছোট ছোট যানবাহনের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, বরিশাল নগরীতে বর্তমানে এত পরিমাণে বৈধ-অবৈধ ব্যাটারি চালিত যানবাহন ও সিএনজি গাড়ি রয়েছে, যে কোনো গাড়িরই সব আসন যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয় না। যেকোনো রুটের মাঝামাঝি জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখবেন এই ছোট গণপরিবহনগুলোয় সিট ফাঁকা থাকে। তারা আবার সেই ফাঁকা সিটে যাত্রীর তোলার জন্য পথে পথে যত্রতত্রভাবে থামছে এবং যানজটের সৃষ্টি করছে। তারওপর প্রশিক্ষিত চালক না হওয়ায় প্রায়ই ঘটাচ্ছে দুর্ঘটনা, সব মিলিয়ে ভোগান্তিতে আছি আমরা।

প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, রাস্তাঘাট প্রশস্ত ও না বাড়িয়ে কোনোভাবেই চতুর্থ পরিষদের প্রায় পাঁচ হাজার ব্যাটারি ও মোটর চালিত হলুদ অটোরিকশার বৈধতা দেওয়া উচিত হয়নি। কারণ, একইসঙ্গে নগরে ব্যাটারি চালিত রিকশা, প্যাডেল রিকশা, ব্লু ও সবুজ রঙের সিএনজি, মাহিন্দ্রা, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল চলাচল করে। উচিত ছিল পরিকল্পিত পরিকল্পনা হাতে নিয়ে গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়ানো।

এক্ষেত্রে শুধু থ্রি-হুইলার না বাড়িয়ে বন্ধ থাকা সিটি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ সবচেয়ে কার্যকর হতে পারত। এতে ১০টি হলুদ অটো রিকশার যাত্রী একাই পরিবহণ করতে পারত কম প্রশস্তের বাসগুলো এবং নগরে যানবাহনের চাপ কমত।

উল্লেখ্য, সাবেক মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরণ পরিষদের সময় নাগরিকদের ব্যয় ও ভোগান্তি লাঘবে নগরের তিনটি রুটে একতলা বাসের সাহায্যে সিটি সার্ভিস চালু করা হয়। এছাড়া শুধু প্যাডেল চালিত রিকশার পাশাপাশি মাত্র দেড় হাজার ইজিবাইকের অনুমোদন দেওয়া হয়। ক্ষমতার পালা বদলের পর সিটি সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেলেও বাণিজ্যের সুবাদে ইজিবাইকের সংখ্যা প্রতি পরিষদের হাত ধরেই এগিয়েছে সামনের দিকে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD